দেবীপক্ষে জীবন্ত দুর্গার আরাধনা : মাতৃরূপে পূজিত‌ মহিলারা

22nd October 2020 8:23 pm বর্ধমান
দেবীপক্ষে জীবন্ত দুর্গার আরাধনা : মাতৃরূপে পূজিত‌ মহিলারা


প্রদীপ চট্টোপাধ‍্যায় ( বর্ধমান ) :  দুর্গা নামের আক্ষরিক অর্থ  যিনি দুর্গতি বা সংকট থেকে  রক্ষা করেন । হিন্দু ধর্মে দেবী দুর্গা মাতৃ শক্তির প্রতিক। তিনি পরমা প্রকৃতি ও সৃষ্টির আদি কারণ । শাস্ত্রের এই মূল উপপাদ্য বিষয়টিকে মান্যতা দিয়ে দুর্গোৎসবে জন্মদাত্রী মাকে সর্বশক্তিমান দেবী রুপে পুজো করা বর্ধমানের মিরছোবায় প্রজ্ঞানন্দ ব্রহ্মচারীর বাড়িতে । পাশাপাশি গৃহকর্মী এবং অন্য মহিলাদেরও দেবীরুপে  পুজো করা হয় । নবমীতে প্রজ্ঞানন্দ ব্রহ্মচারীর বাড়িতে হয় কুমারী পুজো। অন্তরের ভক্তি ও শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়েই হয় সমস্ত পুজোপাঠ । কোন আড়ম্বরতা না থাকলেও জীবন্ত মাতৃ শক্তির পুজো দেখতে এলাকার বহু মানুষ প্রজ্ঞানন্দ ব্রহ্মচারীর বাড়িতে জড়ো হন ।  প্রজ্ঞানন্দ ব্রহ্মচারীর তাঁর বাড়ির নামকরণ রেখেছেন ‘ পিতৃ-মাতৃ মন্দির’। দীর্ঘদিন ধরে সেই মাতৃ মন্দিরেই  মহালয়ার দিন জাতি ধর্ম নির্বিশেষে  এলাকার ৩০ জন মহিলাকে দেবীরূপে পুজো করা হয়। পুজোর আগে নতুন বস্ত্রে সজ্জিত করা হয় মহিলাদের । তার পর ফল, মিষ্টান্ন, নতুন বস্ত্র দিয়ে তাঁদের বরণ করা হয় । বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যদিয়ে হয় পুজো । থাকে  অন্নভোগেরও আয়োজন।প্রজ্ঞানন্দ ব্রহ্মচারীর বাড়িতে পঞ্চমীর দিন থেকেই এলাকার গৃহকর্মীদের দেবীরূপে পুজোও শুরু হয়েযায়। দেবীর ঘটপুজোর আগে যেমন দ্বারঘট পুজো করা হয়, তেমনই গৃহকর্মীদেরও এবাড়িতে  পুজো করা হয়। নবমীর দিন কুমারী পুজো দেখতে বহু মানুষ এই বািতে ভিড় জমান।আর দশমীর দিন জন্মদাত্রী মাকে দেবীরূপে পুজো করেন প্রজ্ঞানন্দ ব্রহ্মচারী।  এমন মহতি পুজো প্রসঙ্গে প্রজ্ঞানন্দ ব্রহ্মচারী বলেন, পিতৃ পক্ষের অবসান হয়ে দেবীপক্ষের সূচনা লগ্নই হল  মহালয়া । তাই সেদিন তাঁর পিতৃ- মাতৃ-মন্দিরে তিনি মহিলাদের দেবীরূপে পুজোর আয়োজন করেন। তাঁর  গৃহও মন্দির। গৃহকর্মীরা তাঁর ঘর অর্থাৎ মন্দির পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখেন। তাই পঞ্চমীর দিন দেবীর ঘটপুজোর আগে যেমন দ্বারঘট পুজো করা হয়, তেমনই দেবীর বোধনের আগে তাঁর মাতৃ মন্দিরে গৃহকর্মীদের পুজো সম্পন্ন  হয়। আর দশমীর দিন জন্মদাত্রী মাকে দেবীরূপে পুজো করেন।প্রজ্ঞানন্দবাবু বলেন , প্রতিমা বিসর্জন হয়, কিন্তু জন্মদাত্রী মায়ের বিসর্জন হয়না। মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে তিনি তাঁকে দেবীরূপে পুজো করেন ।তাঁর মতে দেবী পক্ষে এটাই সর্বোৎকৃষ্ট মাতৃ শক্তির আরাধনা । 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।